সংখ্যা একটা পূর্ণাঙ্গ জীবনকে শেষ করার ক্ষমতা রাখে।
যেকোন
সংখ্যা নয় কিন্তু। প্রত্যেকের
জীবন শেষ করার ভার পড়ে এক একটা বিশেষ সংখ্যার ওপর।
যেমন - ক্ষুদিরামের
ভার পড়েছিল লর্ড কিংসফোর্ডকে হত্যা করার, ঠিক সেরকম।
আমার জীবন শেষ করার দায়িত্ব পড়েছিল 'চার' সংখ্যাটার ওপর। দেখতে দুটো পিংপং বলের পাশাপাশি একে অপরকে স্পর্শ করে থাকার মত। আমি জীবনের বেশিরভাগ সময় ওই স্পর্শ করে থাকা বিন্দুতেই রয়ে গেলাম। কখনও কোনও বৃত্ত বা গোলকের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারলাম না। যদিও বেশ কিছু বৃত্ত ও গোলক আমি তৈরী করেছিলাম, তবে বেশিরভাগই কাল্পনিক। আর সে কারণে না আমি 'রুট ওভার মাইনাস ওয়ান' হতে পারলাম, না কোনও বাস্তব সংখ্যা। কখনও কখনও যে বৃত্ত বা গোলকদ্বয় নিয়ে ৪ তৈরী হয়েছে তাদের কেন্দ্রদ্বয়ের যোগাযোগ রক্ষাকারী সরলরেখাংশে নিজেকে স্থাপন করে দেখি, বড় অদ্ভূত ভাব হয়। যে ভাবের কোনো পজিটিভ-নেগেটিভ নেই, কোনও যোগ-বিয়োগ নেই, সুতরাং আমি ওদের মাঝে পড়ে ভাবুক হয়ে উঠি।
এখন আমি সংখ্যাদের সাথে ঘর করি। সকালে ঘুম থেকে উঠে ১ কে ডেকে নিই। সে আমার দাঁত মাজিয়ে দেয়, চা খাওয়ায়, জল খাওয়ায়। দুই এসে আমার সাথে সাইকেলের বোঝাপড়া তৈরী করে। আমি সাইকেলে উঠে বসি। মনে হয়, সাইকেলের দুটো চাকা ক্রমশ পরস্পরের দিকে এগিয়ে আসছে। ওরা চার তৈরী করবে, তারপর আমার জীবনটা ভেঙে তছনছ করে দেবে। আমি ধীরে ধীরে সাইকেল চালাই। সাইকেলের বিভিন্ন অংশের আওয়াজ আমায় দুই বা তিন বা চার বা আরও বেশি অঙ্কের সংখ্যার কথা মনে করায়, যেগুলো ৪ দিয়ে তৈরী। আমি নেমে পড়ি সাইকেল থেকে। অটো ধরব বলে দাঁড়িয়ে থাকি।
চুমু উঁকি মারে অটো থেকে। বলে, উঠে এসো। একটাই সীট আছে দেখে আমি উঠে পড়ি। চুমুর ব্লাউজের হাতা আর কনুই আর পাছার ওপর অংশে থাকা শাড়িটা আমার হাত আর পাছার পাশ ছুঁয়ে আছে। ল্যাঙ্গুয়েজ আর লিটারেচার নিয়ে কথা বলতে বলতে অটো এগিয়ে যায়। অটোর তিনটে চাকা এসবের মাঝে পাশাপাশি এসে বসে। ওদের তিন কেন্দ্র যোগ করে তৈরী হয় ত্রিভুজ। তিনমাথা একসাথে হবার পর ওদের রাগ হয় আমার ওপর। কারণ, ম্যানুফ্যাকচারিং কেমিষ্ট হিসাবে কাজ করলেও আমি ল্যাঙ্গুয়েজ বা লিটারেচার নিয়ে বেশি কথা বলেছি। ওরা ঠিক করে পারম্যুটেশন-কম্বিনেশনে ওরা তিন থেকে যেকোন দুই নিয়ে ৪ তৈরী করবে। তারপর আমায় ধ্বংস করে দেবে। আমি হঠাৎ ত্রিভুজের ভরকেন্দ্রে এসে বসায় এসব কথা আমার কানে আসে। আমি চুমুকে টাটা দিয়ে নেমে পড়ি।
আমি বাসে উঠব বলে দাঁড়িয়ে থাকি। সামনে একটা কারখানার সামনে একটা বাস দাঁড়িয়ে আছে। দেখলাম দুটো করে চাকা লাগানো বাসে। ভয় পেয়ে দৌড়তে লাগলাম আমি। এর আগে একবার স্বপ্ন দেখেছিলাম -- বাসের পিছনে একসাথে লাগানো দুটো চাকা আসলে 'চার'। কোনো একসময় একই বাসকে ভালোবেসে ওরা পাশাপাশি রয়ে গেছে।
এবার সত্যিই আমি পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম। এখন আর শুধু ৪ নয়, যেকোন সংখ্যাই আমায় পাগল করে দিতে পারে। ভয় পেয়ে আমি ঘর থেকে বেরনো, কোনও কাজ করাও ছেড়ে দিয়েছিলাম প্রায়।
গতকাল, দু'মাস ২৪ দিন পর রিষার সাথে দেখা হল বাগনান ফ্লাইওভারের নীচে। রান্নাপুজোয় ফোন করা সত্ত্বেও যাইনি কেন জিজ্ঞেস করে ও বলল, যেন যাই। ওর জিন্স প্যান্টে দেখলাম ৪ সংখ্যাটা আটকে গেছে। আর ও বললও -- "৪-৫ বার ফোন করলাম, এলেও না, ফোনও ধরলে না!" তারপর থেকে আমি নিশ্চিন্ত হলাম, ৪ আর আমার কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। কারণ, ও আমাকে একদিন- দুদিন-তিনদিন - ৪ দিন বলেছিল" আমি তোমাকে ১দিন-২দিন-৩দিন না দেখে থাকতে পারি। চতুর্থ দিন যেভাবেই হোক তোমায় আমার কাছে আসতেই হবে।"
তারপর থেকে আমি গান শুনছি আর চার চারবার করে গেয়ে উঠছি -- "য়েক রাধা য়েক মীরা / দোনোনে শামকো চাঁহা / অন্তর কেয়া দোনোকি / চাঁহা মে বোলো / য়েক প্রেম দিবানি / য়েক দরস দিবানি।"
আমার জীবন শেষ করার দায়িত্ব পড়েছিল 'চার' সংখ্যাটার ওপর। দেখতে দুটো পিংপং বলের পাশাপাশি একে অপরকে স্পর্শ করে থাকার মত। আমি জীবনের বেশিরভাগ সময় ওই স্পর্শ করে থাকা বিন্দুতেই রয়ে গেলাম। কখনও কোনও বৃত্ত বা গোলকের কেন্দ্রবিন্দু হতে পারলাম না। যদিও বেশ কিছু বৃত্ত ও গোলক আমি তৈরী করেছিলাম, তবে বেশিরভাগই কাল্পনিক। আর সে কারণে না আমি 'রুট ওভার মাইনাস ওয়ান' হতে পারলাম, না কোনও বাস্তব সংখ্যা। কখনও কখনও যে বৃত্ত বা গোলকদ্বয় নিয়ে ৪ তৈরী হয়েছে তাদের কেন্দ্রদ্বয়ের যোগাযোগ রক্ষাকারী সরলরেখাংশে নিজেকে স্থাপন করে দেখি, বড় অদ্ভূত ভাব হয়। যে ভাবের কোনো পজিটিভ-নেগেটিভ নেই, কোনও যোগ-বিয়োগ নেই, সুতরাং আমি ওদের মাঝে পড়ে ভাবুক হয়ে উঠি।
এখন আমি সংখ্যাদের সাথে ঘর করি। সকালে ঘুম থেকে উঠে ১ কে ডেকে নিই। সে আমার দাঁত মাজিয়ে দেয়, চা খাওয়ায়, জল খাওয়ায়। দুই এসে আমার সাথে সাইকেলের বোঝাপড়া তৈরী করে। আমি সাইকেলে উঠে বসি। মনে হয়, সাইকেলের দুটো চাকা ক্রমশ পরস্পরের দিকে এগিয়ে আসছে। ওরা চার তৈরী করবে, তারপর আমার জীবনটা ভেঙে তছনছ করে দেবে। আমি ধীরে ধীরে সাইকেল চালাই। সাইকেলের বিভিন্ন অংশের আওয়াজ আমায় দুই বা তিন বা চার বা আরও বেশি অঙ্কের সংখ্যার কথা মনে করায়, যেগুলো ৪ দিয়ে তৈরী। আমি নেমে পড়ি সাইকেল থেকে। অটো ধরব বলে দাঁড়িয়ে থাকি।
চুমু উঁকি মারে অটো থেকে। বলে, উঠে এসো। একটাই সীট আছে দেখে আমি উঠে পড়ি। চুমুর ব্লাউজের হাতা আর কনুই আর পাছার ওপর অংশে থাকা শাড়িটা আমার হাত আর পাছার পাশ ছুঁয়ে আছে। ল্যাঙ্গুয়েজ আর লিটারেচার নিয়ে কথা বলতে বলতে অটো এগিয়ে যায়। অটোর তিনটে চাকা এসবের মাঝে পাশাপাশি এসে বসে। ওদের তিন কেন্দ্র যোগ করে তৈরী হয় ত্রিভুজ। তিনমাথা একসাথে হবার পর ওদের রাগ হয় আমার ওপর। কারণ, ম্যানুফ্যাকচারিং কেমিষ্ট হিসাবে কাজ করলেও আমি ল্যাঙ্গুয়েজ বা লিটারেচার নিয়ে বেশি কথা বলেছি। ওরা ঠিক করে পারম্যুটেশন-কম্বিনেশনে ওরা তিন থেকে যেকোন দুই নিয়ে ৪ তৈরী করবে। তারপর আমায় ধ্বংস করে দেবে। আমি হঠাৎ ত্রিভুজের ভরকেন্দ্রে এসে বসায় এসব কথা আমার কানে আসে। আমি চুমুকে টাটা দিয়ে নেমে পড়ি।
আমি বাসে উঠব বলে দাঁড়িয়ে থাকি। সামনে একটা কারখানার সামনে একটা বাস দাঁড়িয়ে আছে। দেখলাম দুটো করে চাকা লাগানো বাসে। ভয় পেয়ে দৌড়তে লাগলাম আমি। এর আগে একবার স্বপ্ন দেখেছিলাম -- বাসের পিছনে একসাথে লাগানো দুটো চাকা আসলে 'চার'। কোনো একসময় একই বাসকে ভালোবেসে ওরা পাশাপাশি রয়ে গেছে।
এবার সত্যিই আমি পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম। এখন আর শুধু ৪ নয়, যেকোন সংখ্যাই আমায় পাগল করে দিতে পারে। ভয় পেয়ে আমি ঘর থেকে বেরনো, কোনও কাজ করাও ছেড়ে দিয়েছিলাম প্রায়।
গতকাল, দু'মাস ২৪ দিন পর রিষার সাথে দেখা হল বাগনান ফ্লাইওভারের নীচে। রান্নাপুজোয় ফোন করা সত্ত্বেও যাইনি কেন জিজ্ঞেস করে ও বলল, যেন যাই। ওর জিন্স প্যান্টে দেখলাম ৪ সংখ্যাটা আটকে গেছে। আর ও বললও -- "৪-৫ বার ফোন করলাম, এলেও না, ফোনও ধরলে না!" তারপর থেকে আমি নিশ্চিন্ত হলাম, ৪ আর আমার কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। কারণ, ও আমাকে একদিন- দুদিন-তিনদিন - ৪ দিন বলেছিল" আমি তোমাকে ১দিন-২দিন-৩দিন না দেখে থাকতে পারি। চতুর্থ দিন যেভাবেই হোক তোমায় আমার কাছে আসতেই হবে।"
তারপর থেকে আমি গান শুনছি আর চার চারবার করে গেয়ে উঠছি -- "য়েক রাধা য়েক মীরা / দোনোনে শামকো চাঁহা / অন্তর কেয়া দোনোকি / চাঁহা মে বোলো / য়েক প্রেম দিবানি / য়েক দরস দিবানি।"
(চিত্রঋণ : Eric Gill)
দুই পা মিলে এক বৃত্ত। দুই হাত মিলে এক বৃত্ত। বৃত্তে বৃত্তে চারে চারাজীবন যেন নৃত্যভঙ্গিমা...
ReplyDeleteহুম।
ReplyDeleteবেশ মজাদার। আমার কিউবয়ডাল ফোনের ভরকেন্দ্রে
ReplyDeleteকবিতাটা রয়ে গেল…যদিও বুড়ো আঙুল দিয়ে পৌঁছানো গেল না ।
ধন্যবাদ
ReplyDelete